আজও কাজ শুরু হয়নি শিলাইদহে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের
লিখেছেন লিখেছেন আতিকুর রহমান ফরায়েজী ১৫ মার্চ, ২০১৩, ০৮:১০:৪৬ সকাল
সাহিত্য সৌধের কালজয়ী প্রতিভা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিমাখা কুষ্টিয়ার শিলাইদহে ভারতের শান্তি নিকেতনের আদলে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কোন প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি আজো।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার দুই বছর পার হলেও ঘোষণা শুধু কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। অন্য দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিলাইদহের কুঠি-বাড়িকে দ্বিতীয় শান্তিনিকেতন হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখে ছিলেন সে স্বপ্নও বাস্তবায়িত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা সত্ত্বেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কোন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরা হলে বিষয়টি তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে গত ২০১০ সালের ৮ মে ওসমানী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কবির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কুষ্টিয়ায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের স্পষ্ট ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে বাস্তবায়নে ঢাকাস্থ কুষ্টিয়া জেলা সমিতির মহাসচিব আব্দুর রাজ্জাক সহ সমিতির নেতৃবৃন্দ তথ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে এবং কুষ্টিয়ার শিলাইদহের সামনে সমিতির পক্ষে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ কুষ্টিয়া সফরকালে কুষ্টিয়ায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ শিক্ষা মন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদকে একটি ডিও লেটার ও চিঠি লিখেন। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ এক মহান যুগ স্রষ্টা পুরুষ। তার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতি বিশ্ব দরবারে বিপুল পরিচিতি লাভ করে এবং তারই ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বতন্ত্র জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই মহান কবির স্মৃতি ও কর্মের যোগ্য মর্যাদা দানের জন্যই জাতির জনক শিলাইদহে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে কবিগুরুর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন কিংবা তদপূর্বে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করলে আমাদের জ্ঞান, ভাষা ও সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক যুক্ত হবে। তথ্যমন্ত্রী আরো উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে আপনার সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সদয় নির্দেশনা দেন। চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি। এখবর কুষ্টিয়ার সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়লে বিশিষ্ট গবেষক ড. আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর অবহেলা আর প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবে শিলাইদহের কুঠিবাড়ি আজও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেনি। অথচ এই শিলাইদহেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সাহিত্যকর্মের উল্লেখযোগ্য অংশ রচনা করেছিলেন। এমন কী নোবেল-জয়ী কাব্য ‘গীতাঞ্জলী’র মূল-সুর তিনি শিলাইদহেই পেয়েছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং রবীন্দ্রনাথের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কুষ্টিয়ার শিলাইদহেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন জরুরী। গবেষক ম. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যের রস অন্বেষণের জন্য বারবার শিলাইদহে এসেছেন। অথচ ঐতিহাসিক এই কুঠিবাড়িকে কেন্দ্র করে সরকারের কোনো আগ্রহ নেই। বঙ্গবন্ধুর সময় কুঠিবাড়িকে দ্বিতীয় শান্তিনিকেতন করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটি এখন আর আলোচনায় আসে না।’ কুষ্টিয়ার কবি মতিউল আলম জানান, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা বর্তমান সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। এখানে অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এবং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তথ্যমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রক্রিয়া ও প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এলাকার মানুষের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে শিলাইদহে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পটি সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুরের কাছারিবাড়িতে স্থানান্তরের জন্য সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট একটি মহল পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জমিদারী পরিচালনার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯১ সালে কুঠিবাড়িতে আসেন। কবির নানা সাহিত্য কর্ম সৃষ্টিতে শিলাইদহ গ্রাম ও কুঠিবাড়ির বিশেষ অবদান ও পটভূমিকা রয়েছে। শিলাইদহের নিভৃত পল্লীতে বসে কবি প্রবন্ধ, কবিতা, গল্পসহ অসংখ্য গান রচনা করেছেন। এরমধ্যে গীতাঞ্জলী, চিত্রা, ক্ষণিকা, উর্বশী ও দুই বিঘা কবিতাসহ অসংখ্য গান লিখেছেন তিনি। রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান বিভাগের ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম বলেন, এ বিভাগের কোনো আপৎকালীন ফাণ্ড নেই। কুঠিবাড়ির সামান্যতম উন্নয়নের
বিষয়: বিবিধ
১২০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন